ফজরের নামাজের পর বিছানায় তাকিয়ে দেখলাম, বাচ্চা দুটি আমার নিশ্চিন্তে নির্বিঘ্নে ঘুমাচ্ছে। জানালার পর্দার ফাঁক গলে সকালের স্নিগ্ধ আলো তাদের গায়ে খেলা করছে! পরক্ষণেই গাজার শতশত শিশুর কথা মনে পড়ে গেল। যারা জীবনের কোন কিছু বুঝে উঠার আগেই ঝরে পড়ে যাচ্ছে। তাদের নিথর নিস্তব্ধ দেহের কথা মনে পড়ে। মনে পড়ে পরিবারের সব সদস্য হারিয়ে বিহবল হয়ে ধ্বংসস্তপের উপর নির্বাক বসে থাকা পিতার কথা। মনে পড়ে, ৬/৭ বছরের রক্তাক্ত বাচ্চার মায়ের নিথর দেহের দিকে নিশ্চুপ চেয়ে থাকা। মনে পড়ে, মানবিক সাহায্যের জন্য, একটু পানি, একটু খাবার আর নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য নিরপরাধ মানুষের দিগ্বিদিক ছোটাছুটি। মনে পড়ে, তথাকথিত সভ্য জগতের মানবিকতা, মনুষ্যত্ব আর Self-Defense এর মনগড়া একপেশে সংজ্ঞা! খুব ইচ্ছে করে, কোন দিন যদি যেতে পারি এই নিপীড়িত মানুষের মাঝে তবে ঐ সব মায়েদের, শিশুদের, পিতাদের, ভাইদের, বোনদের চোখে অন্তত একবার তাকিয়ে দেখতে চাই এত শোক তারা কিভাবে সহ্য করে, কি মায়ায় এত রক্তে রঞ্জিত মাটি আঁকড়ে বেঁচে থাকতে চায়। আর বলতে চাই এ পৃথিবীর একজন ক্ষুদ্র মানুষ হিসাবে আমার অক্ষমতাকে ক্ষমা কর। স্বাধীনতার প্রতিক্ষায় যে অবরুদ্ধ মানুষগুলো মুক্তি পেয়েছে ক্ষুধায়, রোগে, ঘাতকের নির্মমতায় তাদের কবরের পাশে দাঁড়িয়ে একটু সালাম দিতে চাই, বলতে চাই, আল্লাহ যেন তোমাদের সর্বোচ্চ সম্মান দান করে আর এ পৃথিবীর একজন ক্ষুদ্র মানুষ হিসাবে আমার অক্ষমতাকে ক্ষমা কর।
shisir mehdi
মো: মেহেদী হাসান। জন্ম করতোয়া পাড়ের পুন্ড্রবর্ধনের স্মৃতিমাখা বগুড়ায়। সরকারী আজিজুল হক কলেজ হতে রসায়নে স্নাতকোত্তর। খন্ডকালীন এমফিল করছেন রুয়েটে। বগুড়ার বিয়াম মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজে প্রভাষক পদে চাকুরির মাধ্যমে কর্ম জীবনের শুরু। বর্তমানে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরে কর্মরত। শিশির মেহ্দী ছদ্মনামে লেখালেখির শুরু করেছিলেন। প্রকাশিত বই চক্র ( ছোট গল্প) এবং নির্বাসনে আছি (কবিতা)। পানি নিয়ে একটা গবেষণা পত্র প্রকাশিত হয়েছে আন্তর্জাতিক জার্নালে। লেখালেখি, ভ্রমণ ও ল্যান্ডস্কেপ ফটোগ্রাফিতে ব্যাপক আগ্রহ রয়েছে।